নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পাকিস্তানকে অনুসরণ করুন: ড. আকবর আলি খান
তত্ত্বাবধায়ক সকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, যদি শক্তিশালি ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চান, তাহলে পাকিস্তানকে অনুসরণ করুন। পাকিস্তানে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার চালু করা হয়েছে। সেখানকার আদালত কিন্তু বলেনি, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করা ঠিক হবে না। পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা হয় একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে এবং রিটার্নিং অফিসার করা হয় জেলা জজদেরকে। জেলা জজরা রাজনীতির সাথে কম সম্পৃক্ত থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থায় যদি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কমাতে চান, তাহলে জেলা জজদেরকে রিটানিং কর্মকর্তা করুন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আরো বেশি বিতর্কিত বলেও জানান তিনি।
শনিবার (০৯ এপ্রিল) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন এর প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে এক ছায়া সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান এসব কথা বরেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আকবর আলি খান বলেন, বাংলাদেশে শতভাগের অধিক ভোট পেয়েও নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি বরং জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্তদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছেসেই জন্য বর্তমান কমিশনকে সাহসী হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় সরকারি দল না চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন সহজ নয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী গণআন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা সম্ভব, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরী। নির্বাচনে হস্তেক্ষেপ করলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নির্বাচনে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিদেশীদের পরোক্ষ চাপ থাকবে। তবে বিদেশীদের চাপ সরকার কিভাবে নিবে তা বলা কঠিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
ড. আকবর আলি খান আরো বলেন, আইন অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে নির্বাহী বিভাগ ক্ষমতাসীনদের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারেন না, এমনকি তারা ভবিষ্যত বেনিফিট নেয়ার চিন্তা করে। তাই বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। ইসির সাথে চলমান সংলাপে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের বেশির ভাগই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিষয়ে নানা প্রস্তাব করেছেন। অনেকে মনে করছেন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সরকার কি হবে তার জন্য আইন ও সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হলে ইসি সরকারকে সেটি প্রস্তাব করবেন। কিন্তু সে বিষয়ে সর্বশেষ সংলাপের আলোকে ইসি বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি রাজনৈতিক নেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন’। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইসি জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে কি না তা বোঝার জন্য আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে।
নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ নিম্নের ১০ দফা সুপারিশ করেন-
১. সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা।
২. মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সর্বস্তরে সকল প্রার্থীর জন্য সমতল ক্ষেত্র তৈরি করা।
৩. নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন নির্মোহ পেশাজীবীদের সাথে আলোচনাকালে যে সকল প্রস্তাব এসেছে সেগুলো প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা।
৪. জেলা প্রশাসকদের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া।
৫. পূর্বের নির্বাচন ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা অথবা অন্য কোন ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনী অপরাধ করে থাকলে তা চিহ্নত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।
৬. নির্বাচনের পূর্বে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ দূর করতে ইসিকে সরকারের সাথে আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
৭. অকারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি না হয় সেদিকে ইসিকে দৃষ্টি দেয়া।
৮. যেসব আইনের দ্বারা নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম বাঁধা সম্মুখীন হতে পারে সাংবাদিকদের জন্য সে আইন শিথিল করা।
৯. নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রতিহিংসা রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১০. গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বাধা তৈরি হলে প্রয়োজনে ইসিকে পদত্যাগের সৎ সাহস রাখা।
এদিকে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি এর বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ছায়া সংসদের বিষয় ছিল- বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক শাকিলা জেসমিন ও সাংবাদিক কাজী জাবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
শনিবার (০৯ এপ্রিল) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন এর প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে এক ছায়া সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান এসব কথা বরেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আকবর আলি খান বলেন, বাংলাদেশে শতভাগের অধিক ভোট পেয়েও নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি বরং জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্তদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছেসেই জন্য বর্তমান কমিশনকে সাহসী হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় সরকারি দল না চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন সহজ নয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী গণআন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা সম্ভব, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরী। নির্বাচনে হস্তেক্ষেপ করলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নির্বাচনে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিদেশীদের পরোক্ষ চাপ থাকবে। তবে বিদেশীদের চাপ সরকার কিভাবে নিবে তা বলা কঠিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
ড. আকবর আলি খান আরো বলেন, আইন অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে নির্বাহী বিভাগ ক্ষমতাসীনদের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারেন না, এমনকি তারা ভবিষ্যত বেনিফিট নেয়ার চিন্তা করে। তাই বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। ইসির সাথে চলমান সংলাপে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের বেশির ভাগই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিষয়ে নানা প্রস্তাব করেছেন। অনেকে মনে করছেন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সরকার কি হবে তার জন্য আইন ও সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হলে ইসি সরকারকে সেটি প্রস্তাব করবেন। কিন্তু সে বিষয়ে সর্বশেষ সংলাপের আলোকে ইসি বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি রাজনৈতিক নেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন’। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইসি জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে কি না তা বোঝার জন্য আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে।
নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ নিম্নের ১০ দফা সুপারিশ করেন-
১. সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা।
২. মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সর্বস্তরে সকল প্রার্থীর জন্য সমতল ক্ষেত্র তৈরি করা।
৩. নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন নির্মোহ পেশাজীবীদের সাথে আলোচনাকালে যে সকল প্রস্তাব এসেছে সেগুলো প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা।
৪. জেলা প্রশাসকদের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া।
৫. পূর্বের নির্বাচন ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা অথবা অন্য কোন ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনী অপরাধ করে থাকলে তা চিহ্নত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।
৬. নির্বাচনের পূর্বে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ দূর করতে ইসিকে সরকারের সাথে আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
৭. অকারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি না হয় সেদিকে ইসিকে দৃষ্টি দেয়া।
৮. যেসব আইনের দ্বারা নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম বাঁধা সম্মুখীন হতে পারে সাংবাদিকদের জন্য সে আইন শিথিল করা।
৯. নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রতিহিংসা রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১০. গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বাধা তৈরি হলে প্রয়োজনে ইসিকে পদত্যাগের সৎ সাহস রাখা।
এদিকে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি এর বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ছায়া সংসদের বিষয় ছিল- বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক শাকিলা জেসমিন ও সাংবাদিক কাজী জাবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
No comments:
Post a Comment
Please validate CAPTCHA