উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের জানিয়ে দেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তিনি জনবল নিয়োগ দেবেন। এরপর তাঁরা উপাচার্যের কক্ষ থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে জড়ো হন। বেলা দেড়টার দিকে উপাচার্য দপ্তর থেকে বাংলোয় যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতারা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যেতে দেবেন না বলে উপাচার্যের গাড়ি আটকে দেন। ১০ মিনিট গাড়ি আটকে রাখেন তাঁরা। পরে কয়েকজন শিক্ষক গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সরিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান সভাপতি ২০০৭ সালের ২৮ মে থেকে ক্যাম্পাসে আছেন। তাঁর ছাত্রত্ব শেষ। কমিটির মেয়াদও শেষ। শেষ সময়ে বিভিন্নজনকে চাকরি দেওয়া ও দরপত্র কবজায় নিতে উপাচার্যের গাড়ি আটকে দেন তিনি। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ নেতা–কর্মীদের যোগ নেই।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলামকে কর্মকর্তা পদে চাকরি দেওয়ার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেছি। তিনি এতে কোনো ধরনের সাড়া দিচ্ছেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন হলের পানির পাম্পের সমস্যা ও হলের ফটক তৈরি করতে হবে। এসব বিষয়েও উনি কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’ তিনি বলেন, ‘আগের উপাচার্যের আমলে ৪৮টি পদের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। দলের কর্মীরা পরিশ্রম করেছেন। তাঁদের চাকরি দরকার, তাই উপাচার্যকে বলেছি। গাড়ি থামানোর ১০ মিনিট পর আমি নিজেই ছেড়ে দিয়েছি।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘দলের জন্য সবকিছু করেছি। এখন আমার বয়সও চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চাকরি চাই। উপাচার্যের কাছে একাধিকবার গেছি। তিনি কোনো সাড়া দিচ্ছেন না।’
এ বিষয়ে দুপুরে কথা হয় উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ছাত্রলীগের নেতারা তাদের চাকরি দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু কোনো চাপের মুখে তো আমি এগুলো করতে পারি না। এসব বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। ওরা প্রথমে আমার কক্ষে গিয়ে উচ্চবাচ্য করে। পরে ১০ মিনিট গাড়ি আটকে রাখে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখানে যোগদান করেছি দুই মাস হলো। আমাকে আগে সবকিছু বুঝতে হবে। হুট করে কোনো কিছু করার পক্ষে নই আমি।’
No comments:
Post a Comment
Please validate CAPTCHA