মণিপুরি মহিলা সমিতির সভাপতি এস রীনা দেবীর বিরুদ্ধে দায়ের করা অপহরণ মামলা প্রত্যাহার ও অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সুশীল সমাজ এবং মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা।

গতকাল রোববার সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৭২ বছরের প্রবীণ একজন নারীকে অপহরণ মামলার আসামি করা হয়েছে। এই বয়সে জামালপুরে গিয়ে অপহরণ করা কিংবা এর সঙ্গে যোগসাজশ হওয়ার কোনো কথা নয়। তারা বলেন, রীনা দেবী একজন প্রবীণ সমাজকর্মী ও মানবাধিকার কর্মী। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। উদ্দেশ্যমূলকভাবে একদল ভূমিদস্যু চক্র আগেও রীনা দেবীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করেছে।

মণিপুরি যুব সমিতির সভাপতি ধীরেন সিংহের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার কর্মী সমেন্দ্র সিংহের পরিচালনায় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, ব্লাস্টের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কীম, বাংলাদেশ মণিপুরি সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি একে শেরাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম, সিলেট ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুল মোনায়েম, বর্তমান সভাপতি ফরিদ আহমদ, বাংলাদেশ দলিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের উপদেষ্টা লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক লাবলু বড়ূয়া, মানবাধিকার কর্মী লক্ষ্মীকান্ত সিংহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, রীনা দেবীর সম্পত্তির বিরাট অংশ ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা বেদখল করেছে। যেটুকু বাকি আছে তাও বেদখল করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে ভূমিদস্যু চক্রটি। এজন্য ভুয়া দলিল তৈরি, বিভিন্নভাবে হুমকিসহ সিটি করপোরেশনের সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে প্রায় ২০ বছর ধরে হয়রানি করে আসছে। ২০১১ সালেও রীনা দেবীসহ তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সংক্রান্ত একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন।

জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার শেখ নূর মিয়া নামের এক ব্যক্তি জামালপুর আদালতে তার ভাইকে অপহরণের মামলা দায়ের করেন। মামলায় রীনা দেবীকে তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়, নূর মিয়ার ভাই আব্দুল আহাদকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত করছে। মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রীনা দেবীকে ১৫ জানুয়ারি জামালপুর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন সিলেট বিভাগীয় ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক শংকর দাস, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি দিগেন সিংহ, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক কমিশনের কোষাধ্যক্ষ ইউসুফ আলী প্রমুখ।