পার্টনারশিপ বা অংশীদারি ব্যবসার আদ্যোপান্ত : পর্ব ১ - Independent Human Rights Defender, Bangladesh

Latest

Independent Human Rights Defender, Bangladesh

Mission: We champion human dignity, justice, and equality. Civic Vision: protect rights, fight injustice, and promote people-centred democracy. Vision: We envision a world with equal access to quality education for every child. Our initiative, "One World, One Identity, One Curriculum," embodies this fair, united future. Protecting Minorities: We are campaigning for a robust protection system for minority communities in Bangladesh, guaranteeing their safety, security, and equal citizenship.

Sunday, October 3, 2021

পার্টনারশিপ বা অংশীদারি ব্যবসার আদ্যোপান্ত : পর্ব ১

 

যৌথ ব্যবসা আইন

পার্টনারশিপ বা অংশীদারি ব্যবসার আদ্যোপান্ত : পর্ব ১

দেওয়ানি আইন ব্যবসায়িক আইন

 ১৮৯০ সালের ব্রিটিশ অংশীদারি আইনের ১ম ধারায় বলা হয়েছে যে, মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে যৌথভাবে পরিচালিত কারবারে কতিপয় ব্যক্তির মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে অংশীদারি বলা হয়। আবার, প্রফেসর থমাসের মতে, মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে কতিপয় ব্যক্তির দ্বারা সংগঠিত সংঘ কর্তৃক পরিচালিত কারবারই অংশীদারি কারবার নামে পরিচিত। কিন্তু, সর্বশেষ ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, সকলের দ্বারা বা সকলের পক্ষে একজনের দ্বারা পরিচালিত কারবারের মুনাফা নিজেদের মধ্যে বণ্টনের নিমিত্তে একাধিক ব্যক্তির মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে যে সম্পর্কের সৃষ্টি হয়, তাকে অংশীদার বলে। আর যারা এই অংশীদারির সম্পর্ক সৃষ্টি করে, তাদের প্রত্যেককে অংশীদার এবং সম্মিলিতভাবে তাদের কারবারকে অংশীদারি কারবার বলে। তবে অংশীদারি কারবারের জন্য কমপক্ষে ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জন ব্যক্তি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে চুক্তির মাধ্যমে যে আইনসংগত কারবার গঠন করে, তাকে অংশীদারি কারবার বলা হয়। তবে, ব্যাংকিং ব্যবসার ক্ষেত্রে অংশীদারদের সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ জন হতে পারবে।

কমপক্ষে ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জন ব্যক্তি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে চুক্তির মাধ্যমে যে আইনসংগত কারবার গঠন করে সেই কারবার কীভাবে পরিচালিত হবে, কীভাবে অংশীদাররা নিজেদের মধ্যে অংশ বণ্টন করবেন বা কীভাবে কি করবেন, সবকিছুই চুক্তিপত্রের মধ্যে উল্লেখ থাকতে হবে। চুক্তিপত্রই হচ্ছে অংশীদারি কারবারের মূল ভিত্তি। অংশীদারি চুক্তিপত্র এমনভাবে রচিত হওয়া উচিত, যাতে অদূর ভবিষ্যতেও কোন সমস্যার সৃষ্টি হলেও সেটি সমাধানের পথ তথা দিক নির্দেশনা বর্ণীত থাকে। সেই লক্ষ্যে অংশীদারি চুক্তিপত্রে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয়, সেগুলো নিম্নরূপ:
• অংশীদারি কারবারের নাম,
• অংশীদারি কারবারের ঠিকানা,
• কারবারের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য ও আওতা,
• কারবারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কর্মের এলাকাভিত্তিক পরিধি,
• কারবারের মেয়াদকাল,
• অংশীদারদের নাম, ঠিকানা ও পেশা,
• কারবারের মূলধনের পরিমাণ ও প্রকৃতি,
• অংশীদারদের প্রদত্ত মূলধনের পরিমাণ ও নতুন মূলধন সংগ্রহের পদ্ধতি,
• মূলধনের উপর সুদ দেওয়া হবে কিনা, দেওয়া হলেও সেটি কোন হারে?
• অংশীদারি কারবার থেকে অংশীদারগণ কোন টাকা উত্তোলন করতে পারবে কিনা, পারলেও সেটি কতো বা কি হারে? এই টাকা উত্তোলনের উপর আবার সুদ বা মুনাফা ধরা হবে কিনা, হলে কোন হারে, সেটিও উল্লেখ থাকতে হবে।
• অংশীদারি কারবারের অংশীদারদের মাঝে লাভ লোকসানের বণ্টন পদ্ধতি সাথে হার,
• কারবার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নিয়মাবলী,
• কারবারের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে নিয়মাবলীসহ হিসাবের বই সংরক্ষণ ও পরিদর্শন,
• অংশীদারি কারবারের টাকা পয়সা কোন ব্যাংকে রাখা হবে, সেই সম্বন্ধে বিস্তারিতসহ ব্যাংকিং কার্যক্রম কে পরিচালনা করবে তার নাম ও পদবি,
• বিভিন্ন প্রয়োজনে অংশীদারি কারবারের দলিল পত্রে ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্বাক্ষর প্রদানকারী ব্যক্তির নাম ও পদবি,
• অংশীদারি কারবারের প্রয়োজনে ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্বন্ধে বিস্তারিত,
• পার্টনারদের অধিকারসহ দায়িত্ব ও কর্তব্য কি কি
• পার্টনারদের মধ্যে কেউ কোন কাজের বিনিময়ে এককালীন বা সময় ভিত্তিক পারিশ্রমিক পাবে কিনা, সে সম্বন্ধেও বিস্তারিত,
• অংশীদার বা পার্টনারদের সংযোজন- বিয়োজন প্রক্রিয়া,
• প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বছর কবে শুরু, কবে শেষসহ ব্র্যান্ড ভ্যালু তথা সুনাম মূল্যায়নের বিধান,
• কোন পার্টনার অবসর নিলে বা মৃত্যুবরণ করলে তার পাওয়া পরিশোধসহ তার প্রতি অংশীদারি কারবারের দায় দায়িত্ব,
• পার্টনারশিপ চুক্তির কোন পরিবর্তন আনতে হলে, সেটার পদ্ধতি,
• পার্টনারশিপ চুক্তিতে উল্লেখ নেই, এমন কোন বিষয় নিয়ে বিরোধ হলে সেটি কীভাবে মীমাংসা হবে, সেটি নির্ধারণ,
• অবশেষে, পার্টনারশিপ ব্যবসা বা অংশীদারি কারবারের অবসান তথা বিলুপ্ত হওয়ার পদ্ধতি এবং বিলুপ্তির কালে কারবারের সম্পত্তির মূল্যায়ন ও বণ্টন প্রক্রিয়া।

 

অনেকগুলো গৎবাঁধা নিয়ম কানুন অনুসরণ করে অবশেষে পার্টনারশিপ ব্যবসা বা অংশীদারি কারবার শুরু করতে হয়। আর প্রয়োজন বশত, চুক্তিপত্র ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের আওতায় সর্বদা সংযোজন- বিয়োজন, পরিবর্তন বা বাতিল করা যাবে। তবে, যতো নিয়ম কানুনই চুক্তি লেখা থাকুক না কেন, তারপরও যেহেতু মানুষ মাত্রই পরিবর্তনশীল সেহেতু কোন কোন নতুন ইস্যু নিয়ে পার্টনারদের মাঝে গণ্ডগোল হতেই পারে। তখন, পার্টনারশিপ ব্যবসা বা অংশীদারি কারবারের সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বা ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা করা যাবে।
বিঃদ্রঃ পার্টনারশিপ ব্যবসা বা অংশীদারি কারবারে একজন অংশীদার আরেকজন অংশীদারের প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য হবেন। যার ফলে একজনের কাজের জন্য অন্যজনকে দায়বদ্ধ করা যাবে। একজন অংশীদার বাকী অংশীদারদের অনুমতি ব্যতীত পার্টনারশিপ ব্যবসা বা অংশীদারি কারবারে তার নিজের শেয়ার কারো কাছে হস্তান্তর করতে পারবে না। সবশেষে, একজন অংশীদারের মৃত্যু, দেউলিয়া বা মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ হলে, তার স্থলে তার উত্তরাধিকার স্থলাভিষিক্ত হবে না, বরং পার্টনারশিপ ব্যবসা বা অংশীদারি কারবারের বিলুপ্তি বা অবসান ঘটতে পারে। আজ এতটুকুই, পরবর্তী পর্বগুলোতে অংশীদারি কারবার এবং অংশীদারদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

লেখকঃ চৌধুরী তানবীর আহমেদ ছিদ্দিক; এলএলবি, এলএলএম

https://article.legalfist.com/civil-law/business-law/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%aa-%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%85%e0%a6%82%e0%a6%b6%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf/ 

Endless gratified thanks for reading / watching /listening

No comments:

Post a Comment

Please validate CAPTCHA