সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন : প্রাথমিক পরিচয় [ধারা : ১-৫৭] - Independent Human Rights Defender, Bangladesh

Latest

Saturday, October 2, 2021

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন : প্রাথমিক পরিচয় [ধারা : ১-৫৭]

[বিশেষ জ্ঞাতব্য : এই কনটেন্টটি মূলত ‘আইনের ধারাপাত’ নামক বইটির 122-124 পৃষ্ঠা থেকে নেওয়া হয়েছে।  আইনের ধারাপাত বইটি কুরিয়ারে সংগ্রহ করতে ফোন দিন : 01712-908561]

[এই অংশের ওপর আগামী ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যারা ফ্রি একাউন্ট খুলেছেন তারা  কীভাবে পরীক্ষা দিতে হবে বা একাউন্ট ব্যবহার করতে হবে – তা যদি বুঝতে না পারেন তবে এই ভিডিওটি দেখে রাখতে পারেন :

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন দেওয়ানি আইনের প্রধানতম তত্ত্বগত আইন। এই আইনে বর্ণিত সংজ্ঞা, ধারণাগুলোই দেওয়ানি কার্যবিধি দ্বারা প্রয়োগ করা হয় আদালতে। দণ্ডবিধি ও ফৌজদারি কার্যবিধির ভেতরের যে সম্পর্ক, খানিকটা সমরূপ সম্পর্ক সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন এবং দেওয়ানি কার্যবিধির ভেতরে আছে। তবে, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন – এই নামকরণে সামান্য ভিন্ন কিছু প্রতীয়মান হয়। সাধারণভাবে যেসব বিষয়ে সাধারণ আইন যথেষ্ট প্রতিকার দিতে পারেনি বলে বিভিন্ন সময় প্রতীয়মান হয়েছে সেই বিষয়সমূহ নিয়েই দেওয়ানি অধিকার সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দাঁড় করানোর প্রয়োজনেই এই ‘সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন’ এর উদ্ভব। 

১৮৭৭ সালে প্রণীত এই আইনটিতে তিনটি খণ্ড আছে যেমনটি ছিলো সাক্ষ্য আইনে। তিনটি খণ্ডে বিভক্ত এই আইনে ধারার সংখ্যা মাত্র ৫৭ টি। আইনটি তুলনামূলক ছোট হওয়ায় এর বিষয়বস্তু বা গুরুত্বপূর্ণ ধারা পড়া বিষয়ক নির্দেশনা এক আলোচনাতেই সামান্য-সংক্ষিপ্ত পরিচয় আপনাদের জন্য তুলে ধরবো এখানে। 

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের সূচনা অংশে ৩ ধারায় ব্যাখ্যা অনুচ্ছেদে চুক্তি আইনে বর্ণিত শব্দের সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে সেটি বলা আছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ। এরপরে ৪ থেকে ৭ ধারা পর্যন্ত প্রতিটি ধারাই গুরুত্বপূর্ণ। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫ ধারাটিতে কী কী ভাবে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার পাওয়া যায় তা বলা আছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই ধারাটি পুরোটা মুখস্থ রাখতে হবে এবং পুরো আইনের বিভিন্ন টপিকের সাথে সম্পর্কিত করে বুঝে রাখতে হবে। ৬ ও ৭ নং ধারা থেকেও আসার মতো এমসিকিউ প্রশ্ন আছে। খেয়াল করে পড়বেন।

এর পরে প্রথম অধ্যায়ে ‘সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গে’ শিরোনামে ৮-১১ পর্যন্ত ৪টি ধারা থাকলেও মূলত ৮ ও ৯ ধারাটি খুবই গুরুত্ববহ। ৮ ধারাটি মূলত স্বত্ব ঘোষণার মোকদ্দমার ধারা হিসেবে পরিচিত। ধারাটির সাথে ৪২ ধারা [ঘোষণামূলক ডিক্রির দাবিতে] মিলিয়ে কোনো স্বত্ব ঘোষণার মোকদ্দমা করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে ৯ ধারাটি দখল পুনরুদ্ধারের মোকদ্দমার ধারা হিসেবে পরিচিত। ৯ ধারা থেকে অনেকরকমভাবে প্রশ্ন আসা সম্ভব। এই ধারাটির পুরো উপলব্ধি ধারাটি ভেঙে ভেঙে মনে রাখতে হবে।

২য় অধ্যায়ের মূল শিরোনাম হলো – ‘চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদন প্রসঙ্গে’। এই অধ্যায়ের বিস্তৃতি ১২ থেকে ৩০ ধারা পর্যন্ত। এই ধারাগুলো পড়তে গিয়ে অনেক পাজলড লাগলেও একটু খেয়াল করলে দেখবেন যে, বিষয়গুলো অতোটা জটিল নয়। প্রধানভাবে মনে রাখবেন যে, যেসব চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যায় সে সম্পর্কে প্রধান ধারাটি হলো ১২ ধারা; এবং এর সাথেই সম্পর্কিত আরো কিছু বিশেষ পরিস্থিতি বর্ণিত আছে ২০ ধারা পর্যন্ত। আবার, এই ২০ ধারা পর্যন্ত বর্ণিত বিষয়গুলোর ভেতরেও একধরনের ছন্দ আছে। এর প্রতিটি ধারার বিষয়বস্তুগুলো ভালো করে মনে রাখলে খুবই ভালো হয়। লক্ষ্য করবেন যে, ১৪, ১৫ ও ১৬ ধারা তিনটির কথা ১৭ ধারার একটি বিশেষ সম্পর্ক আছে। ওদিকে, ১৯ ও ২০ ধারাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

তার মানে ১২ ধারা যে বিষয়বস্তু দিয়ে শুরু হলো সেই বিষয় নিয়েই ২০ পর্যন্ত ধারাগুলো সেই ধারণাটিরই আরো সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে খানিকটা উল্টে নিয়ে যেসব চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করা যায় না সে সম্পর্কে প্রধানতম ধারাটি হলো ২১ ধারা। ১২ কে উল্টো করে লিখলে ২১ হয়। ২১ ধারা বিষয়বস্তুর বিস্তৃতি আর অন্য কোনো ধারায় নেই। ২২ ধারা থেকে চুক্তির আরো কিছু সাধারণ বিষয়সমূহ আলোচনা করা আছে। ২১ ধারাটি অনেক উদাহরণসমৃদ্ধ ধারা। এটি ভালো করে পড়ে নেওয়া অবশ্যই জরুরি। ২১ ধারার পরেই অবশ্য ২১ক একটি ধারা রয়েছে। এটি থেকে প্রশ্ন সাধারণত আসে। দেখবেন। ৩০ ধারা পর্যন্ত ধারাগুলোও বেশ জরুরি। এগুলোর এক ধরনের বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতা এবং ছন্দ আছে; সেগুলো কিছুটা এক্সপ্লোর করতে পারলে মনে রাখতে সুবিধা হবে। আরো কিছুদিন পরে এগুলো নিয়ে আরেকটি লেখা এখানে যুক্ত করবো বলে আমরা আশাবাদী।

এরপরে ৩য় অধ্যায়ে ৩১-৩৪ ধারা পর্যন্ত দলিল সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা। ৪র্থ অধ্যায়ে চুক্তি রদ [৩৫-৩৮], ৫ম অধ্যায়ে দলিল বাতিল প্রসঙ্গে [৩৯-৪১], ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে ঘোষণামূলক ডিক্রি [৪২-৪৩] এবং ৭ম অধ্যায়ে রিসিভার নিয়োগ প্রসঙ্গে আলোচনা। এর প্রতিটি ধারাই জরুরি। অল্প কয়েকটি ধারাতেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে। মাত্র এই কয়টি ধারায় এতগুলো বিষয়ের উপলব্ধি তৈরি হয়ে যাবে – এই বিবেচনায় এগুলো ভালো করে পড়বেন। এ বিষয়গুলোর প্রয়োগ হরহামেশাই সমাজে প্রয়োজন হয়। একবার বুঝে উঠলেই এগুলো ভোলার কথা নয়।

সবশেষে আছে নবম ও দশম অধ্যায় যা কিনা এই আইনের তৃতীয় খণ্ডের অংশ। এর মূল শিরোনাম ‘নিরোধক প্রতিকার প্রসঙ্গে’। এর ৫২ ও ৫৩ ধারায় ‘সাধারণ নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে’ এবং ৫৪-৫৭ ধারায় ‘চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে’ শিরোনামে আলোচনা আছে। দেওয়ানি মোকদ্দমায় এই নিরোধক প্রতিকারের প্রয়োগ প্রায়ই লক্ষণীয়। এরও প্রতিটি ধারা গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলোর কোনো তালিকা আমরা এখানে দিচ্ছিনা, উপরন্তু এর সবগুলোই আপনাদের পড়ার পরামর্শ দেবো। ভালোভাবে উপলব্ধিতে নিতে হবে যেন পরীক্ষায় আসা ১০টি প্রশ্ন থেকে পুরো নাম্বারই পাওয়া যায়। তবে নিচের ছকে বিগত সালের প্রশ্নগুলো থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসার হার থেকে একটি তালিকা নিজের মতো করে গুছিয়ে নিতে পারেন।

 https://juicylaw.com/how-to-read-sr-act/


 

 

Endless gratified thanks for reading / watching /listening

No comments:

Post a Comment

Please validate CAPTCHA