নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি: পর্ব ১ - Independent Human Rights Defender, Bangladesh

Latest

Independent Human Rights Defender, Bangladesh

Mission: We champion human dignity, justice, and equality. Civic Vision: protect rights, fight injustice, and promote people-centred democracy. Vision: We envision a world with equal access to quality education for every child. Our initiative, "One World, One Identity, One Curriculum," embodies this fair, united future. Protecting Minorities: We are campaigning for a robust protection system for minority communities in Bangladesh, guaranteeing their safety, security, and equal citizenship.

Wednesday, October 6, 2021

নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি: পর্ব ১

 

নাবালক সম্পত্তি বিক্রি আইন

নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি: পর্ব ১

উত্তরাধিকার আইন

‘নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি’ বলতে প্রথমত আমরা যা বুঝি তা হচ্ছে, একজন ‘নাবালক’ যে কিনা এখনো ‘সাবালকত্ব’ অর্জন করেনি, কিন্তু তার নামে কিছু সম্পত্তি রয়েছে, সেই সম্পত্তি বিক্রি। এই অণুচ্ছেদে আমরা জানার চেষ্টা করবো, নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি করার প্রক্রিয়া। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অন্য কারো সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে তো আলাদা করে কথা বলতে বা লেখা পড়তে দেখা যায় না; যার সম্পত্তি বিক্রির প্রয়োজন হয়, সে গিয়ে সাব- রেজিস্ট্রি অফিসে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে, লেটা চুকে গেলো। সেখানে, নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে কেন আলাদা করে এতো মাতামাতি?
প্রত্যেকটা বিষয় একেবারে রুট লেভেলের মানুষের বোধগম্য করার জন্য পয়েন্ট ধরে ধরে এগুতে অণুচ্ছেদটি একটু দীর্ঘ হবে এবং পাঠকের সুবিধার্থে প্রয়োজনে একাধিক পর্বে খণ্ডন করা হবে।

প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক, নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে কেন এতো মাতামাতি?- প্রিয় ভাই/বোন, মাতামাতিটা সবসময় ব্যতিক্রমকে নিয়েই হয়ে থাকে। নাবালকের বিপরীত হচ্ছে সাবালক; সাবালককে তার সম্পত্তি বিক্রি করতে কখনো কাউকে জিজ্ঞাসা করতে হয় না। সাবালক নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে, তাই তার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করতে তার বাপকেও জিজ্ঞাসা করতে হয় না; জোকস এ পার্ট। নাবালক ব্যক্তি সাবালক হওয়ার আগ পর্যন্ত তার সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য তার বাপ তথা বাবার কাছ থেকেও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মনে রাখার সুবিধার্থে আরও সহজ করে বললে বলা যায়, সাবালকের সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে তার বাবা- মা, আত্মীয়- স্বজন, কোন অভিভাবকের অনুমতির প্রয়োজন নেই। সেখানে, নাবালককে তার সম্পত্তি বিক্রি করতে হলে বাবা- মা, আত্মীয়- স্বজন বা কোন অভিভাবকের দ্বারস্থ হতে হবে। দ্বারস্থ হতে হবে বলার চেয়ে এটা বলা বৈধ যে, বাবা- মা, আত্মীয়- স্বজন, কোন অভিভাবক ব্যতীত নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি করা সম্ভব নয়। যদিও নাবালক নিজের সম্পত্তি নিজে বিক্রি করতে পারে না, কিন্তু নাবালকের নামে সম্পত্তি ক্রয় করা সম্ভব।

এখন আসুন, আমরা দেখি কেন একজন নাবালক সম্পত্তি ক্রয় করতে পারে বা গ্রহণ করতে পারে কিন্তু পক্ষান্তরে বিক্রি কেন করতে পারে না?

  • সাবালকত্ব আইন ১৯৭৫ অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী যেকোনো ব্যক্তির ‘নাবালক’। আমরা যদিও শুরুতেই এই সংজ্ঞাটা ব্যবহার করতে পারতাম, কিন্তু আইনের একটা ক্রম সাজানোর তাগিদে একটু দেরিতে রেফারেন্স টানলাম। তবে, রেফারেন্সের এই ক্রমটা আশা করি যারা গদ্য অপছন্দ করে নিরেট আইনটা দেখতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য বেশ উপকারে দিবে। যাই হোক, সাবালকত্ব আইনই বলে দিচ্ছে, আপনাকে সাবালক হতে হলে অন্তত ১৮ বছর বয়সী হতে হবে। কেউ কেউ এখানে আবার প্রশ্ন করতে পারেন যে, ১৮ বলতে আসলে ১৮ বছরে পড়লে নাকি ১৮ বছর পূর্ণ হলে?- উত্তর হচ্ছে, ১৮ পূর্ণ হলে।
  • এরপর আসুন চুক্তি আইনে। চুক্তি আইন ১৮৭২ অনুযায়ী কোন নাবালক ব্যক্তি চুক্তি সম্পাদন করতে পারে না। জমি ক্রয় বিক্রয় এক ধরনের চুক্তি। আর চুক্তি আইন অনুযায়ী নাবালক চুক্তি সম্পাদন করতে পারে না। অর্থাৎ, চুক্তি আইনেও বাঁধা রয়েছে।
  • সচেতন পাঠক প্রশ্ন করতে পারেন যে, বিক্রয় যেমন চুক্তি, ক্রয়ও তেমন চুক্তি। নাবালক তো ক্রয় বিক্রয় দুটোই করতে পারেন না, তাহলে পূর্বে কেন বলা হল যে, একজন নাবালক সম্পত্তি ক্রয় করতে পারে বা গ্রহণ করতে পারে কিন্তু পক্ষান্তরে বিক্রি করতে পারে না। আপনার প্রশ্নের জন্য অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। আপনার প্রশ্নের জবাবে জানানো হচ্ছে যে, সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয় হস্তান্তর আইন ১৮৮২ অনুসারে। আর এই হস্তান্তর আইনেই নাবালকের বরাবর বা অনুকূলে বা নাবালকের পক্ষে কোন সম্পত্তি হস্তান্তরে কোন বিধি নিষেধ নেই। যার ফলে, নাবালকের অভিভাবক কোন সম্পত্তি নাবালকের পক্ষে ক্রয় করলে তা বৈধ হবে। হস্তান্তর আইন নাবালকের সম্পত্তি হস্তান্তরে বাঁধা প্রদান করলেও নাবালকের অনুকূলে সম্পত্তি হস্তান্তরে বাঁধা প্রদান করেননি। যেহেতু তথ্য প্রযুক্তির যুগ, তাই আরও মিন উদাহরণ টানলে বলা যায়, নাবালকের সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয়ের সময় মনে রাখতে হবে, Incoming free, outgoing blocked. অর্থাৎ, নাবালকের অনুকূলে তথা নাবালকের নামে সম্পত্তি আসতে পারবে, কিন্তু নাবালকের সম্পত্তি বাহিরে যেতে পারবে না।
  • ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩৫ ধারা মতে, কোন নাবালক দলিল সম্পাদন করতে পারবে না। নাবালকের পক্ষে তার বাবা বা মা বা অভিভাবক দলিল সম্পাদন করতে হবে।

 

উপরোক্ত ৪ টি আইনে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে যে বাঁধা প্রদান করেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে একজন নাবালক চাইলেও তার সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবে না। হোক সেটা সাফ কবলা তথা বিক্রি বা দান বা অন্য যেকোনো কিছু। এতোটুকু ক্লিয়ার হলেই কেবল আমরা পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে পারবো। আশা করি, আমরা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে, কেন একজন নাবালক ব্যক্তি সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারে না।

এখন, প্রশ্ন হচ্ছে একজন নাবালকের সম্পত্তি বিক্রির করার প্রয়োজন কেন? আসলেই, প্রশ্নটা করেছেন নিজেকে কখনো? একটু গ্রাম্য ভাষায় বললে, একটা ‘মাসুম’ বাচ্চা ছেলে বা মেয়ের সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে কেন এতো মাতামাতি?

পাঠকের কাছে এই প্রশ্নটা রেখে আজকের পর্ব এখানেই সমাপ্তি টানছি। আগামী পর্বগুলোতে আমরা জানার চেষ্টা করবো, নাবালকের সম্পত্তি কেন বিক্রি করা প্রয়োজন হতে পারে, কে বা কারা নাবালকের সম্পত্তি বৈধ ভাবে বিক্রি করতে পারে, অন্যায় ভাবে নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি করলে কি হবে বা কি করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। আজকের আল্লাহ্‌ হাফেজ।

 https://article.legalfist.com/civil-law/inheritance-law/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf/

Endless gratified thanks for reading / watching /listening

No comments:

Post a Comment

Please validate CAPTCHA